মানুষ কীভাবে মানুষ হবে?
মানুষ হয়ে ওঠা মানুষের প্রথম কর্তব্য। মানুষ হওয়ার জন্য সর্বাগ্রে চিত্তশুদ্ধি প্রয়োজন। চিত্তশুদ্ধির জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন জ্ঞানার্জন। পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো একমুখী জ্ঞান। একমুখী জ্ঞানচর্চা না করে বহুমুখী জ্ঞানচর্চা করলে আশানুরূপ সুফল পাওয়া যায়—আর্থ-সামাজিক জ্ঞান, দার্শনিক জ্ঞান, আত্মিক জ্ঞান, ধর্মীয় জ্ঞান, বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, রাজনৈতিক জ্ঞান, কারিগরি জ্ঞান, সাংস্কৃতিক জ্ঞানার্জনে আত্মনিয়োগ করা আবশ্যক।
জ্ঞানার্জনের মাধ্যম হিসেবে আমরা সচরাচর যা জানি তা হলো বই পড়া, ভ্রমণ, শিক্ষা সফর, বিতর্ক ইত্যাদি। কিন্তু আমরা প্রায়ই জ্ঞানের সবচেয়ে খাঁটি ও মৌলিক ভাণ্ডারটি সম্পর্কে উদাসীন হয়ে পড়ি—প্রকৃতি। শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়; প্রকৃতির আইন, প্রকৃতির শৃঙ্খলা, প্রকৃতির বিনাশ, প্রকৃতির প্রতিশোধ—এ সমস্তই জ্ঞানের বিশুদ্ধতম উৎস। প্রকৃতি ছাড়া মানুষের অস্তিত্ব কল্পনাও করা যায় না, প্রকৃতির কোলেই মানুষ বেঁচে থাকে।
জ্ঞানার্জন ও চিত্তশুদ্ধির কল্যাণে মানুষ তার মনের সংকীর্ণতা, অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও কুপ্রবৃত্তি দূর করে একটি নৈতিক, সুবিবেচক ও সৎ জীবন যাপনে উদ্বুদ্ধ হয়। এই দুই কাজের মধ্য দিয়ে মানুষ নিজের মধ্যে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটাতে পারে। বলাবাহুল্য, মনুষ্যত্বহীন মানুষের সাথে ইতর প্রাণীর কোনো অজৈবিক তফাৎ নেই।
জ্ঞানার্জন ও চিত্তশুদ্ধি হয়ে গেলে মানুষ হয়ে ওঠার তৃতীয় ধাপ হলো ‘কর্ম’। জ্ঞান ও চিত্তশুদ্ধিকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগই কর্ম। এই কর্ম নানাবিধ হতে পারে। যার যেটি ইচ্ছে সে সেই ধরনের এক বা একাধিক কর্ম গ্রহণ করতে পারে। বলে রাখা ভালো চিত্তশুদ্ধি যদি ঠিক থাকে তবে কারও পক্ষে অসৎ কর্ম গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। তাই কর্মকে যে অবশ্যই সৎ ও কল্যাণকর হতে হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আমি ‘পঞ্চপথ ক্লাব’ নামে একটি ভিন্নধর্মী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছি ২০১৫ সালে।
আমার নকশা করা পঞ্চপথ ক্লাবের পতাকা
এই ক্লাবের মূল পাঁচটি লক্ষ্যার্জন মানুষকে মানুষ করে তোলার পক্ষে সহায়ক অর্থাৎ মানুষের মনুষ্যত্ব লাভে সহায়ক।
লক্ষ্য পাঁচটি হলোঃ
১) জ্ঞানচর্চা
২) চিত্তশুদ্ধি
৩) দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন
৪) পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণ
৫) বিজ্ঞানভিত্তিক জীবনব্যবস্থা
এই ক্লাবের শেষের তিনটি লক্ষ্যকে কর্ম হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।