স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় কী?

    স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় কী?

    Doctor Asked on March 3, 2015 in সাধারণ.
    Add Comment
    1 Answer(s)

      অনেকে নিজের ফোন নম্বর, আইডি নম্বর, এমনকি হঠাৎ করে নিজের নাম পর্যন্ত ভুলে যান। স্মৃতিশক্তি যেন কাজ করতে চায় না। এসব সমস্যায় হয়তো ছেলে-বুড়ো সবাই পড়েছেন। বয়স বাড়তে থাকলে ভুলে যাওয়াটা ধীরে ধীরে রোগে পরিণত হয়! কিন্তু কিছু বিষয় খেয়াল করলে এই সমস্যাতো সমাধান হবে সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তি আরো বৃদ্ধি পাবে।

      মস্তিষ্কে খেলা খেলুন

      নিয়মিত ব্রেনের কাজ করলে মস্তিষ্ক ভালো থাকে। সুডোকো কিংবা ক্রসওয়ার্ডস খেলাসহ ব্রেনের ব্যায়াম হয় এমন খেলা খেললে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায় সেইসঙ্গে মস্তিষ্ক অধ:পতন হওয়া থেকে রক্ষা করে।

      সঠিক খাবার

      স্মৃতিশক্তি ভালো রাখতে খাদ্যের কোনো বিকল্প নেই। নিয়মিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার, রঙিন সবজি ও ফলমূল খেলে মস্তিষ্ককে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে মস্তিষ্ককে ভালো রাখে। কিন্তু চিনি এবং মাংস জাতীয় খাবার বেশি পরিমানে খেলে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেয়ে আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থেকে যায়। কিন্তু ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার বেশি খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।

      পরিমিত ঘুম

      ঠিকমতো ঘুম না হলেও স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়। ঘুমের সময়ের উপর স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও বৃদ্ধি পায়। দৈনিক আট ঘণ্টা গভীর ঘুম হলে স্মৃতিশক্তি অস্থায়ী থেকে দীর্ঘমেয়াদী হবে।

      নতুন দক্ষতা অর্জন করা

      সম্প্রতি সুইডিশ এক গবেষণায় দেখা যায়, যারা নতুন নতুন ভাষা শেখেন, নতুন নতুন মানুষের নাম মনে রাখেন কিংবা নতুন নতুন বিষয় শিখেন তাদের স্মৃতিশক্তি অন্যান্যদের তুলনায় ভালো থাকে। যারা এই বিষয়গুলো চর্চা করেন না তাদের স্মৃতিশক্তি খানিকটা লোপ পায়।

      কায়িক পরিশ্রম

      গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিন সামান্য কাজ করলে বিশাল মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। যারা একসঙ্গে ৬ মিনিট সাইকেল চালায় এবং যারা নিয়মিত দলবেধে পাহাড়ে ওঠে। যারা নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করে তাদের অন্যদের তুলনায় স্মৃতিশক্তি ভালো থাকে। প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ মিনিট হাটলে স্মৃতিশক্তি ভালো থাকে, সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

      একসঙ্গে অনেক কাজ থেকে বিরত থাকা

      একই সময়ে এক সঙ্গে একাধিক কাজ না করে একটি মাত্র কাজ করতে হবে। অনেক কাজ একসঙ্গে করলে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়। কাজ করার পাশাপাশি তা মুখে উচ্চারণ করলে তা মনে থাকবে দীর্ঘসময়। যেমন আপনি টেবিলে চাবি রাখছেন তখন চাবি রাখার পাশাপাশি মুখেও বলুন ‘আমি টেবিলে চাবি রাখছি।’ তাহলে আর ভুলে যাবেন না।

      বৈজ্ঞানিক উপায় :

      দুশ্চিন্তা দূর করুন :

      দুশ্চিন্তা ও মানসিক অশান্তি মানুষের স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়। তাই স্মৃতিশক্তি ধারালো রাখার জন্যে মনকে ফ্রেস রাখা জরুরী। এজন্যে মেডিটেশন, ইয়োগো করলে ভাল হয়।

      রক্তপ্রবাহ ঠিক রাখা :

      ব্যায়াম শুধু স্বাস্থ্য নয়, মনের জন্যও দরকারি। লং টার্ম মেমোরি গড়ে তোলার জন্যে ব্যায়াম বেশ কার্যকরী। কেননা এতে শরীরের রক্তপ্রবাহ ঠিক থাকে। আর রক্তপ্রবাহ ঠিক থাকলে মনও ভাল কাজ করে।

      চিত্রকল্প তৈরি :

      মানুষের মন ভিজুয়াল বা ইমেজ স্মরণে রাখতে পটু। তাই যে কোনো স্মৃতির সঙ্গে ইমেজ এসোসিয়েশন স্মৃতিশক্তি প্রখর করার জন্যে কার্যকরী ভূমিকা পালক করে।

      পাজেল খেলা :

      ব্রেন গেম যেমন পাজল, সুডোকু, ক্রসওয়ার্ডস এগুলো মানুষের স্মৃতিশক্তিকে আরো প্রখর করে তুলতে বিরাট ভূমিকা পালন করে।

      বেশি বেশি মাছ খান :

      স্মৃতিশক্তি বর্ধনে খাদ্য হিসেবে মাছের বিকল্প পাওয়া মুশকিল। তাই প্রচুর পরিমাণে মাছ খান, সামুদ্রিক ও ছোটো মাছ।

      পর্যাপ্ত ঘুমান :

      কম ঘুমের কারণে মানুষের ব্রেনের কিছু কিছু সেল বা কোষ ক্ষমতা হারায়। তাই নিয়ম করে ঘুমান। প্রাপ্ত বয়স্করা কম করেও ৬ ঘণ্টা ও শিশু-বৃদ্ধরা ৮ ঘণ্টা ঘুমান।

      নিজের সঙ্গে কথা বলা

      লোকে আপনাকে পাগল বলতে পারে, তবুও সময় পেলেই একান্তে নিজের সঙ্গে নিজে একটু কথা বলে নিবেন। ব্যাপারটা সত্যিই স্বাস্থ্যকর। যারা এমন বকবক করেন তারা নাকি ডিমেনশিয়ায় তুলনায় কম আক্রান্ত হন। শুধু তাই নয়, নিজেকে নিজে গল্প শোনালে নাকি স্মৃতিভ্রংশের মতো ঘটনাকেও প্রতিরোধ করা যায় এবং তাতে রোজের ঘটনা হুবহু আপনার মনে থেকে যাবে।

      নতুন ভাষা শেখা

      নতুন কোনো ভাষা শেখা মানে আপনার মুকুটে আরও একটা পালক-ই শুধু বাড়ল না, আত্মবিশ্বাসও বাড়ল। এবং সবচেয়ে কাজের কথা আপনার স্মৃতিশক্তি কমার বদলে বাড়তে আরম্ভ করল।কেমন করে? নতুন শব্দ মনে রাখতে গেলে মাথাটাকেই তো বেশি করে খাটাতে হবে! প্রতিদিনকার এই মনে রাখা-টাই একসময় আপনার ভুলে যাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেবে।

      শব্দ-জব্দ ছক আর ধাঁধাঁর সমাধান

      এতদিন এসবগুলোকেই ছেলেমানুষি ভেবে এড়িয়ে গিয়েছেন। এবার কাগজ খুলে সবার আগে সুডুকু বা শব্দ-জব্দ খুলে বসুন। যত বেশি সমাধান করতে পারবেন লাভ আপনার। ব্রেন-কে খাটালে তবেই তো সেটা কর্মক্ষম থাকবে!

      গান শুধু গান

      সময় পেলেই গান শুনুন। সমীক্ষা বলছে, রাগ সঙ্গীত নাকি মস্তিষ্কের কোষকে উদ্দীপিত করে। তবে শুধু শুনলেই হবে না। শোনার পর গানের সুর বা কথা মনে মনে গুনগুন করতে হবে যাতে গানটা মনে থাকে। এভাবে গান মনে রাখতে গিয়ে নিজের অজান্তে মনে রাখার ক্ষমতাকেই আপনি বাড়িয়ে তুলবেন।

      Professor Answered on March 3, 2015.
      Add Comment
    • RELATED QUESTIONS

    • POPULAR QUESTIONS

    • LATEST QUESTIONS

    • Your Answer

      By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.