আমার আগে অনেকেই খুব সুন্দর উত্তর দিয়েছেন। বেশ পয়েন্ট করে ডু এন্ড ডোন্টস (পড়ুন কি করা উচিত বা উচিত নয়) এর তালিকা দিয়েছেন।

তাই আমি বরং একটা গল্প শোনাই। এই গল্পটি থেকে যদি কিছু শেখেন, তাহলে তো আমার-আপনার দুজনেরই ভালো লাগবে।

প্রথমেই বলি, এই গল্পটি ইন্টারনেট থেকে পড়েছি । আমার বেশ ভালো লেগেছে, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

বলিউডের এক নামকরা ব্যক্তিত্ব দিলীপ কুমার, এই ঘটনার কথা বলেছেন। তিনি একবার বিমানে করে যাচ্ছিলেন। তখন বলিউডে তাঁর বেশ নাম-ডাক হয়েছে। তার কথায়, তিনি সেই সময় তার ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিলেন। বিমানে ওঠা থেকেই বিমানের যাত্রীরা তাকে চিনতে পেরে তার অটোগ্রাফের জন্য লাইন লাগিয়ে দিলেন। তিনিও সবাইকেই তার অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন এবং এই ব্যাপারটি নিজে থেকে বেশ উপভোগ ও করছিলেন।

এইসময় তিনি লক্ষ্য করলেন, তার পাশের সিটে বসা একজন খুব সাধারণ শার্ট-প্যান্ট পরিহিত এক মিডল ক্লাস ভদ্রলোক এইসব দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপই করছেন না। ওই ভদ্রলোক, একটি সংবাদপত্র পড়ছেন আর মাঝে মাঝে বিমানের জানলার বাইরের দিকে তাকিয়ে আপন মনে কিছু একটা ভাবছেন।

বিষয়টি লক্ষ্য করেই দিলীপ কুমারের ওই ভদ্রলোকটিকে নিয়ে কৌতুহল জেগে উঠলো। তিনি নিজে থেকেই আলাপ করলেন। তারপর জিজ্ঞেস করলেন, তিনি হিন্দী সিনেমা দেখেন কিনা। লোকটি বললেন, সময়ের অভাবে সিনেমা দেখা হয়না। শেষবার সিনেমা দেখেছেন, প্রায় অনেকদিন আগে। এই চুপচাপ, শান্ত লোকটিকে দেখেই দিলীপ কুমার অবাকই হলেন।

তারপর, পুরো যাত্রাপথে আর বিশেষ কথা হয়নি লোকটির সাথে।

এরপর বিমান থেকে নামার আগে, দিলীপ কুমার করমর্দন করার উদ্দেশ্যে হাতটা বাড়িয়ে বললেন –

আপনার সাথে আলাপ করে বেশ ভালো লাগলো। আমি মিস্টার দিলীপ কুমার।

ঠিক একইভাবে লোকটিও বললেন-

আপনার সাথে সাক্ষাৎ করে আমার ভালো লাগলো। আপনি বেশ সুন্দর একটা মানুষ। আর আমি হলাম – মিস্টার জাহাঙ্গীর রতনজি দাদাভাই টাটা (জে আর ডি টাটা) ।

এইটা শুনে দিলীপ কুমারের মনে এতক্ষন ধরে চলতে থাকা সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব কেটে গেল। তিনি জাস্ট ভাবতেই পারছিলেন না, তার পাশে বসে থাকা, খুবই সাধারণ পোশাক পরিহিত, শান্ত এই মানুষটি এত বড় একটা ব্যাক্তিত্ব।

অথচ যাকে তিনি নিতান্তই মধ্যবিত্ত ও নিজেকে তার থেকেও বড় একটা মানুষ ভেবেছিলেন।

সুতরাং, নিজেকে কখনোই বড় ও সর্বোচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন ভাবা উচিত নয়।

মনে রাখবেন, আপনার থেকেও অনেক বড় মাপের মানুষ আছেন। কিন্তু তারা কখনোই নিজেদেরকে নিয়ে জনসমক্ষে জাহির করেন না। তাদের দৃষ্টি থাকে সর্বদা মাটির দিকে। আর কাজের মাধ্যমেই তারা পরিচিতি পান।

পরিচিতির জন্য লোকের কাছে নিজে থেকে নিজের গুনগান করার দরকার নেই।

আশা করি, গল্পটি আপনার ভালো লাগবে।

** সম্পাদনা **

কোরামিত্রদের কমেন্ট থেকে জানতে পারলাম, ফ্লাইটের অভিনেতা ওই যাত্রীটি ছিলেন দিলীপ কুমার। মাফ করবেন, ভুলটা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত ছিল।

আমি সেইমতো ইন্টারনেটে যাচাই করে গল্পটির সম্পাদনা করলাম।

ধন্যবাদ।