ক্যালরি কমিয়ে কীভাবে ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখব?

    শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বাড়লে ওজন বাড়ে আর ক্যালরির পরিমাণ কমলে ওজন কমে। তাহলে কীভাবে আমাদের নিত্যদিনের ক্যালরির চাহিদা পূরণ করার পর তা কমিয়ে এনে ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখব? 

    Vice Professor Asked on February 25, 2015 in স্বাস্থ্য.
    Add Comment
    1 Answer(s)

      স্থূলতার সমস্যাকে আমরা ২ ভাবে দূর করতে পারি। আপনি এ জন্য নিজের মাংসপেশীগুলোকে সর্বদাই কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখুন এবং এর মাধ্যমে অধিক পরিমাণে ক্যালরি খরচ করুন। তাহলে আপনার প্রতিদিন ২০০০ ক্যালরির প্রয়োজন হবে। এছাড়া আমরা এর জন্য এমন খাবার গ্রহণ করতে পারি যেগুলোতে ক্যালরির মাত্রা খুবই কম হয়ে থাকে। এই ২ ‍টি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্যালরি কমবে এবং শরীরে অবস্থিত ফ্যাট গলতে শুরু করবে।

      প্রথম প্রক্রিয়া হল ব্যায়াম করা বা পায়ে হাঁটা। নিজের ব্যস্ত জীবন থেকে আধা ঘণ্টা হাঁটার জন্য ব্যয় করুন। এতে করে ১০০ ক্যালরি খরচ হবে এবং হাতের ব্যায়ামের জন্য ২০০ ক্যালরি খরচ হবে।

      দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটি হল কম ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করা। সামান্য সাবধানতা অবলম্বন করলে এবং সামান্য জ্ঞান সঞ্চয় করতে পারলে খাদ্য থেকে ৪০০-৫০০ ক্যালরি কমানো সম্ভব। আসুন জেনে নিই এটা কীভাবে সম্ভব।

      সারা পৃথিবীতেই নানা ধরনের খাবার পাওয়া যায়। একটি দেশের এক এক স্থানের লোকেরা এক এক ধরনের খাদ্য এবং পানীয় খেয়ে থাকেন। বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিটি খাদ্যের মধ্যে ৩ টি উৎস থাকে যেমন : কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট। এছাড়া খাদ্যে অন্যান্য আরও ৪ টি উপাদান রয়েছে যেমন : খনিজ, ভিটামিন, পানি এবং ফাইবার। এই খাদ্যগুলো ক্যালরি প্রদান করে না তবে এগুলো শরীরের জন্য অপরিহার্য। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাটের মধ্যে ক্যালরি পাওয়া যায় এ কারণে এগুলোকে খাদ্য তালিকা থেকে দূরে রাখা প্রয়োজন।

      কার্বোহাইড্রেটের প্রধান কাজ হল শরীরে ক্যালরির যোগান দেয়া। কিন্তু এই ক্যালরি শরীরে সঞ্চিত হয় না। এটি ছোট ছোট গ্লুকোজের কণায় পরিণত হয়ে অন্ত্রে পাচিত হয় এবং শোষিত হয়ে রক্তে মিশে যায়। আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষ এই গ্লুকোজের সাহায্যেই ক্যালরি উৎপাদন করে। রক্তে গ্লুকোজের আস্তরণ পড়লে শরীর সহজেই সেটিকে ভাঙতে পারে। এক গ্রাম গ্লুকোজ বা কার্বোহাইড্রেট থেকে ৪ ক্যালরি পাওয়া যায়। যদি শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায় তবে সেটি ফ্যাটে পরিবর্তিত হয়ে একত্রিত হয়ে যায়।

      ১ গ্রাম প্রোটিন থেকেও ৪ ক্যালরি পাওয়া যায়। এটি আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি অ্যামিনো অ্যাসিডে পরিবর্তিত হয়ে আমাদের মাংসপেশীগুলিকে দৃঢ় করে এবং পাচক রস আর হরমোন সৃষ্টিতে সহায়তা করে। তাছাড়া এটা খাবারের বিশেষ অংশ যাকে কখনই উপক্ষো করা উচিত না।

      খাদ্যের তৃতীয় উপাদান ফ্যাটও ক্যালরির অন্যতম উৎস। ১ গ্রাম ফ্যাট থেকে ৯ পরিমাণ ক্যালরি পাওয়া যায়। মূলত ফ্যাটই স্থূলতা এবং হৃদরোগের প্রধান কারণ। এর থেকে উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়বেটিস রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কিছু হরমোন এবং পুনরায় কোষ সৃষ্টি ছাড়া ফ্যাট শরীরের আর কোনো কাজ করে না। বিপজ্জনক রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে আমরা ফ্যাটযুক্ত খাবার কম খেতে পারি।

      এর জন্য আমরা তেলছাড়া রান্না করা খাবার খেতে পারি। প্রায় ৯০ শতাংশই এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলোতে কোনো তেলই লাগে না। প্রাকৃতিকভাবে খাবরটিতে থাকা তেল দিয়েই রান্নাটি সম্ভব। তেল ছাড়া রান্না করার পদ্ধতিকে আমরা ‘জিরো অয়েল ডায়েট’ বলে অভিহিত করতে পারি।

      যে সমস্ত ব্যক্তিরা স্থূলতায় পীড়িত তারা কম ক্যালরিযুক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করুন। সাধারণ ওজন যুক্ত কার্বোহাইড্রেটও সহজেই গ্রহণ করতে পারেন।

      খাদ্যবিপ্লবের অন্য একটি দিক হল গৃহীত ক্যালরির গণনা। শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত প্রত্যেক ব্যক্তিই খুব সহজেই ক্যালরি গণনার এই পদ্ধতি শিখতে পারেন। এটা অনেকটা টাকার মতন। সমস্ত প্রকারের খাদ্যকে ৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন : ২০, ৫০, ১০০ এবং ৩০০ ক্যালরির নোট। মনে রাখবেন যে এতে খাদ্য পদার্থের আনুমানিক ক্যালরির হিসাব দেওয়া হয়েছে। এভাবে আপনি খুব সহজেই গৃহীত ক্যালরির অনুমাণ করতে পারবেন।

      একবার এই পদ্ধতি শিখে গেলে খাদ্যের চাবিকাঠি আপনার হাতে চলে আসবে। যারা ওজন কমাতে চান তারা ২০ এবং ৫০ ক্যালরির নোটে যেসব খাদ্যের উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো গ্রহণ করুন। যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চান তারা ১০০ ক্যালরির নোটের দিকে লক্ষ্য করুন। আর ৩০০ ক্যালরির নোট প্রায় সকলের জন্যই ক্ষতিকারক। অন্য দেশের লোকেরা এই টাকার প্রতীককে ডলার এবং পাউন্ড বা স্থানীয় মুদ্রায় পরিবর্তিত করতে পারেন।

      Professor Answered on February 25, 2015.
      Add Comment
    • RELATED QUESTIONS

    • POPULAR QUESTIONS

    • LATEST QUESTIONS

    • Your Answer

      By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.