নেশা কিভাবে ছাড়বো যেকোনো নেশা?

    নেশা কিভাবে ছাড়বো যেকোনো নেশা?

    Add Comment
    1 Answer(s)

      ★নেশা বা আসক্তি কি?

      আসক্তি এক ধরণের প্রবণতা! কোনো বস্তু, ব্যক্তি বা বিষয়ের প্রতি অতিমাত্রায় ঝোক!! আমরা অবশ্যই অবগত থাকি নেশার কারণ ও তার ফলাফল সম্পর্কে, অবগত থেকেও অতিমাত্রায় ঝোক রাখার নামই হলো নেশা!!

      ★ নেশা বা আসক্তি আসে কেনো?

      যখন কোনো কিছু দ্বারা আমরা সুখ অনুভব করি, ক্ষনিকের তৃপ্ততা উপলব্ধি করি, সেই সুখ আর তৃপ্তির লালসা থেকে মনে এক মোহ জন্ম নেয়, তখনই তা নেশা বা আসক্তি তে পরিণত হয়!!

      ★নেশা দুই প্রকার….1- ক্ষতিকারক 2- লাভজনক

      আমরা সবাই কিছু না কিছু নেশায় আসক্ত থাকি!

      যখন আমার আসক্তি অন্যের জীবনেও খারাপ প্রভাব বিস্তার করে তখনই তাকে ক্ষতিকারক বলে!

      অন্য ব্যক্তির উৎসাহ, অর্জন ও প্রাপ্তির কারণ যখন আমার আসক্তি হয়, তখন তা লাভজনক!

      ★ আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়…….?

      লাভজনক আসক্তি থেকে মুক্তি না নেওয়াটাই উত্তম!(তবে অতিরিক্ত মাত্রায় নয়)

      ক্ষতিকারক আসক্তি থেকে মুক্তি তখনই সম্ভব…

      যখন একজন ব্যক্তি নিজের পরিবর্তনকে দায়িত্বের কারণ মনে করেন,তখন তার মধ্যে মনোবল তৈরী হয়!এই কঠোর মনোবল তার সিদ্ধান্তে পরিণত হয়!

      ‘স্ব-প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’ আবশ্যক!

      ★দুর্বল মানুষ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে পারে না!!★

      ★নিজের গুরুত্ব :

      আপনি একবার চোখ বন্ধ করে ভেবে দেখুন, আপনার কিছুই নেই। টাকা, ধন- সম্পদ, খ্যাতি এই সব কিছুই নেই। তখন দেখবেন আপনার সম্পর্ক গুলো রঙ বদলানো শুরু করবে। যেমন যে টাকার জন্য ভালোবাসতো সে সরে যাবে। যে ধন-সম্পদের জন্য ভালোবাসতো সেও সরে যাবে। যে খ্যাতির জন্য ভালোবাসতো সেও সরে যাবে। আসলে এইসব সরে যাওয়া নয়। আপনার রিপ্লেসমেন্ট বানিয়ে নেওয়া। সে বিকল্প একটা ব্যাবস্থা করবে অথবা সেটা না পারলে ব্যবহার এর পরিবর্তন খুব ভালোই খেয়াল করা জায়। মানুষ তার খারাপ সময়ে ভালো থাকার জন্য চেস্টা করে৷ কিন্তু পারে না। এর কারন মানুষ খারাপ সময়ের সাথে তার আগের ভালো সময়গুলোর তফাৎ করে আরো একটা খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করে।

      এই ধরুন আপনার সাথে আপনার বন্ধুর খুবই ভালো সম্পর্ক। কিন্তু সামান্য ঝগড়ার জন্য তার সাথে আপনার সম্পর্কে বিশাল ফাটল। কিন্তু যেটা আপনি হয়তোবা ভাবছেন অনাকাঙ্ক্ষিত এবং সামান্য । কিন্তু সে সেটা সিরিয়াস ভাবে নিয়ে দূরেই সরে গেলো। প্রকৃতপক্ষে এই সম্পর্ক গুলো বেশিরভাগ সময় আপনাকে কষ্টই দিবে৷ যেখানে পুনরুদ্ধারের উপায় থাকে না, সেটা একটা আনহেলদি সম্পর্ক।

      এইসব বিবেচনা করলে দেখা জায়। মোটামুটি সবাই কোন না কোন সমস্যায় আছে। কারন আপনাকে ট্রিগার করা হচ্ছে অন্যকোন মাধ্যমে। যেটা নিয়ে আপনার কল্পনাই করা ছিলো না। এবং আপনার নিয়ন্ত্রণ এর বাহিরে। চাইলেও খুব সহজে বেড় হয়ে আসা সম্ভব নয়।

      আজ আপনি কষ্টে আছেন, কেউ খুবই খারাপ অবস্থা করে ফেলছে, সময় আপনার প্রতিকুলে, কাউকে বলতে পারছেন না, নিরবে সব কিছু সহ্য কর‍তে খারাপ লাগছে আর ভাবছেন কত দুঃখ আমার। ভাই প্লিজ এইবার থামেন। একটু হিসাবে বসি আসেন।

      – দুনিয়াতে কেন আসছেন?

      – কি এজেন্ডা ছিলো?

      – কতটুকু করতে পারছেন?

      – বয়স কত?

      – বয়স অনুযায়ী অর্জন কতটুকু?

      – যতটুকু করছেন তাতে কি নিজের মন খুশি?

      – পাড় পেয়ে যাবেন জায়গামতো?

      আমি কিন্তু আখেরাতের জন্য কি করছেন সেটার কথা বলেছি। যদি এই উত্তর গুলোর মাঝে সামান্য কনফিউজড থাকেন তাহলেই কিন্তু সমস্যা। আল্লাহ খারাপ অবস্থায় ফেলে তার বান্দাকে উপলব্ধি করানোর জন্য, কারন হয়ত আপনি আল্লাহর কাছে থেকে দূরে সরে গেছেন। আপনার সম্পর্ক আছে অনেক কাছের৷ কিন্তু আপন একজনই তিনি হলেন আল্লাহ্। আর এই দুনিয়ায় আল্লাহকে আপন না করতে পারলে পরের জীবনে আরো শোচনীয় অবস্থা হবে৷ কারন মৃত্যুই আপনার শেষ নয়৷ সেটা কেবলই শুরু। আল্লাহ আপনার জন্য অধির আগ্রহে আছে৷ আপনি একবার ডাক দিয়েই দেখুন। কতটা আপন আপনার৷ আপনার কথা গুলো নিরিবিলি আল্লাহর সাথে শেয়ার করুন। যদি কাদতে মন চায়, দুই হাত তুলে কেদে দেখেন। এর থেকে শান্তি, সুখ আর কোথাও পাবেন না। আল্লাহর কাছে পাপীরা যখন সাহায্য চায় তখন আল্লাহ্ অনেক বেশি সারা দেয় কারন পাপীরা রহমতের আশায় আল্লাহকে ডাকে৷ আল্লাহর কিন্তু আপনি ছাড়া অনেক কিছু আছে। কিন্তু আপনার কে আছে? আল্লাহ কি আপনাকে এমনিতেই জান্নাত দিবে? নাকি সেটা আপনাকে অর্জন করতে হবে৷ আল্লাহ দেওয়ার জন্য বসে আছে কিন্তু আপনি নেওয়ার জন্য আগ্রহী নন। সেটা আপনার দোষ। একবার চিন্তা করেন আপনার এই বয়সে কতটুকু নিজের পরকালের জন্য করতে পেরেছেন? ২০ টা সূরা, ৫০ টা হাদিস, ২ জন নবীর জীবনী এইসব জানতে পারছেন? অধিকাংশই জানে না এই জেনারেশন এর।

      এসবের কারন দুনিয়াবি প্রেমে আসক্ত হয়ে যখন দুনিয়া থেকেই এর ফিডব্যাক পায় তখন সে বুঝতে পারে দুনিয়া কত খারাপ। এই অবস্থার পর থেকে কেউ দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে ধংসের দিকে জায়(নেশা)। কেউ মুক্তি পায় আল্লাহর কাছে এসে৷ কিছু প্রশ্ন নিজেকে করুন এবং উত্তর সহ নিজেই রিয়েলাইজ করে দেখুন।

      আপনি কি খুব কষ্টে আছেন? নিজের উপরে মায়া কমে যাচ্ছে? নিঃসঙ্গ অনুভব করছেন? কেউ খুবই বাজে ভাবে আঘাত করেছে? অপমান করেছে? অন্তরটা ভেংগে দিয়েছে? চারিদিকে অন্ধকার মনে হচ্ছে? হয়তো ভাবছেন কাউকে শোনাবেন? আবার এইটাও ভাবছেন কিন্তু কে শুনবে আপনার কথা? কে বুঝবে আপনার ব্যাথা? কে ভাগ নিবে আপনার কষ্ট গুলোর? কে সমাধান করবে আপনার সমস্যা গুলো? হয়তো ভাবছেন আপনার কেউ নাই। কিংবা আপনার পাশে কেউ নাই!

      – আছে একজন আছে। তিনি আপনার প্রতিটি মুহূর্তের খেয়াল রাখেন। তিনি আপনাকে ভালোবাসেন। তিনি আপনার কল্যাণ চান। তিনি আপনার সাথেই থাকেন। তিনি আপনাকে শুনতে চান। তিনি চান আপনি কেদে কেদে তার কাছে বলেন আপনার সব সমস্যা। তিনি আমার এবং আপনার রব আল্লাহ সুবহানাহু তাআ’লা। তিনি সব সমস্যা দূর করবেন। শুধু এই বিশ্বাসটুকু রেখে আপনি এক কদম সামনে এগিয়ে জান। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবে পরবর্তী কদম ফেলতে।

      ভাই দুনিয়াটা একটা মোহ। যাদের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছেন তারাই কষ্ট দেবে একসময়। তাই নিজের জন্য করেন এবং অন্যকেও তার নিজের জন্য করার পরামর্শ দিন। আপনার কান্না শুনে যে মানুষের খারাপ লাগে না, আপনার মৃত্যুতেও কিন্তু সে ভালো ভাবেই ঘুমাতে পারবে। তাই দুনিয়ার মোহ থেকে বেড় হয়ে আসেন৷ খুবই শান্তি আছে যদি আপনার আশা-ভরসা,চাওয়া-পাওয়া সবকিছুই পুরাপুরি আল্লাহর উপর ছেড়ে দেন। আল্লাহর সিদ্ধান্তে বিনয়ী হয়ে থাকতে পারেন। যদি নিজেকে সপে দিতে পারেন।

      আমার এই কথাগুলো কেউ খারাপ ভাবে নিবেন না। আগে আমি ধর্ম পালনে খুবই উদাসীন ছিলাম। আমি চেস্টা করছি। যদিও আমি খুবই সোজাসুজি আসতে পারিনি। বিপদে পরেই ধর্ম পালনে উৎসাহী হয়েছি। আমার ভুল ত্রুটি মাফ করে দিবেন। যে কাউকে মাফ করলে আল্লাহ অনেক খুশি হয়।

      (বি:দ্র: যদি ভালো লাগে তাহলে আপভোট দিয়ে এবং অনুসরণ করে পাশে থাকবেন, ধন্যবাদ। )

      Professor Answered on April 24, 2024.
      Add Comment
    • RELATED QUESTIONS

    • POPULAR QUESTIONS

    • LATEST QUESTIONS

    • Your Answer

      By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.