মানবদেহে কয় ধরণের পেশি থাকে ও কি কি?
মানবদেহে কয় ধরণের পেশি থাকে ও কি কি?
মানবদেহে পেশী প্রধানত ৩ প্রকার। এগুলি হল কঙ্কাল পেশী, মসৃণ পেশী এবং হৃদ্পেশী। কঙ্কাল পেশীগুলি দেহের কঙ্কাল তথা অস্থির সাথে অস্থিসন্ধির মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে। যেহেতু আমরা কঙ্কাল পেশীগুলির নড়াচড়া আমাদের ইচ্ছানুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, তাই এগুলিকে ঐচ্ছিক পেশীও বলা হয়। পেশীগুলির দেখতে ডোরাকাটা বলে এগুলিকে রেখাঙ্কিত পেশীও বলা হয়। কঙ্কাল পেশীগুলি আমাদেরকে হাঁটতে, থেমে যেতে এবং কোনও কিছু ওঠাতে সহায়তা করে। কঙ্কাল পেশীগুলি দুই ধরনের হয়। দ্রুত স্পন্দনশীল পেশী ও ধীর স্পন্দনশীল পেশী। দ্রুত স্পন্দন পেশীগুলি দ্রুত সাড়া দেয় ও দ্রুত নড়াচড়া করতে পারে, কিন্তু এগুলি অল্প সময়েই ক্লান্ত হয়ে যায়। যেমন পায়ের পেশীগুলি দ্রুত স্পন্দন পেশী, তাই আমরা দীর্ঘ সময় ধরে বারবার লাফ দিতে পারি না। এর বিপরীতে ধীর স্পন্দন পেশীগুলি অপেক্ষাকৃত অনেক ধীরে নড়াচড়া করে, কিন্তু এগুলি ক্লান্ত হতেও অনেক বেশি সময় নেয়। যেমন, হাতের বা কব্জির পেশীগুলি ধীর স্পন্দন পেশী, তাই আমরা বহুক্ষণ ধরে কলম দিয়ে লিখতে পারি। মসৃণ পেশীগুলি অন্ননালী, পাকস্থলী, অন্ত্র, শ্বাসনালী, মূত্রথলী, মূত্রনালী, রক্তনালী, এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের দেয়ালে বা আস্তরণে অবস্থান করে। এগুলি সচেতন জ্ঞান ছাড়াই নিজে নিজে সংকুচিত-প্রসারিত হয়। তাই এগুলি অনৈচ্ছিক পেশী, অর্থাৎ এগুলিকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। যেমন, আমরা শত চেষ্টা করলেও পাকস্থলীকে দ্রুত বা আস্তে খাবার হজম করার নির্দেশ দিতে পারি না। হৃদ্পেশী হল হৃৎপিণ্ডের দেওয়ালে অবস্থিত পেশী যার কাঠামো ঐচ্ছিক পেশীর মত হলেও এর কার্যক্রম অনৈচ্ছিক। এগুলি সর্বক্ষণ কাজ করতে থাকে এবং কখনোই ক্লান্ত হয় না। মসৃণ পেশীগুলির মত এগুলিও অনৈচ্ছিক পেশী। আমরা ইচ্ছা করলেই আমাদের হৃৎপিণ্ডকে দ্রুত বা ধীরে কাজ করতে বাধ্য করতে পারি না।