মানুষের শরীরে আচিল কেন হয়?
আঁচিল সাধারণত আকারে ছোট এক ধরণের বিনাইন টিউমার ( যে সব টিউমার ক্যানসার সৃষ্টি করে না তাদের বিনাইন টিউমার বলা হয়। অর্থাৎ, এই টিউমার গুলো আশেপাশের টিস্যুকে আক্রমণ করে না বা ছড়ায় না )। আঁচিল মূলত একটি বৃন্ত এর সাহায্যে চামড়ায় লেগে থাকে। আঁচিল হলে কোনো ধরণের ব্যথা অনুভূত হয় না। অনেকে তো বুঝতেও পারে না যে তার আঁচিল হয়েছে, যতক্ষণ না চোখে পড়েছে। আঁচিল হওয়ার প্রবনতার দিকে নারী-পুরুষ উভয়েই সমানে সমান। তবে, বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আঁচিল হওয়ার হারও বেড়ে যায়।মধ্যবয়সের পর আঁচিল হওয়ার প্রবণতা বেশি হয়।
আঁচিল শরীরের যেকোনো জায়গায় হতে পারে, তবে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ঘাড়ে, বগলে, কুঁচকিতে, বুকের উপরের দিকে ( নারীদের ক্ষেত্রে স্তনের নিচে) । এগুলো চোখের পাতায় এমনকি নিতম্বের ভাঁজেও হতে পারে। শরীরের ভাঁজে ভাঁজে অর্থাৎ যেখানে ত্বকে-ত্বকে অথবা কাপড়ের মাধ্যমে চামড়ায় ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়, সে সব স্থানেই আঁচিল জন্মাতে দেখা যায়।
যে সব মানুষের ওজন তুলনামূলক ভাবে বেশি এবং যারা স্থুলকায় তাদের আঁ*চিল হওয়ার হারও অনেক বেশি, কারণ তাদের শরীরের ভাঁজের সংখ্যাও বেশি।
অতিরিক্ত ওজন টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুকি বাড়িয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা যায়, যাদের এধরনের ডায়াবেটিস আছে তাদের আঁচিল অন্যদের চেয়ে বেশি হয়। যেহেতু, টাইপ-২ ডায়াবেটিস হলে রক্তে সুগার লেভেল বেশি থাকে, সেহেতু আমরা সহজে বলতে পারি আঁচিল এর সাথে ইনসুলিন নামক হরমোনের সম্পর্ক আছে (ইনসুলিন হরমোন রক্তে সুগার এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে) ।
ইনসুলিন মাংসের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং এটা ত্বকের কোষের প্রতিরুপ সৃষ্টিতেও ভুমিকা রাখে। এভাবে পরবর্তীতে আঁচিল বিকাশেও ভুমিকা রাখে। একারণে আঁ/চিল হওয়াকে ডায়াবেটিসের পূর্ব সতর্ক সংকেত হিসেবে ধরা হয়। সবার হবে তা কিন্তু নয়, তবে ডায়াবেটিসের পরীক্ষা করে সচেতন থাকা উচিত।
গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে আঁচিল হতে দেখা যায়। ( গর্ভকালীন সময়ের ১৩-২৭ সপ্তাহ পর্যন্ত সময়কে second trimester বলা হায়। অর্থাৎ, ৪,৫,৬ নাম্বার মাস) আঁচি০ল এর সাথে জিনগত একটা সম্পর্ক আছে, অর্থাৎ, একই পরিবারের অন্যান্য সদস্যেরও হতে পারে।