মেছতা দূর করার উপায় কী?

    বয়সের সাথে সাথে মেছতার সমস্যাটিও বেড়ে চলেছে। আমি জানতে চাই বিরক্তিকর এই মেছতা দূর করার উপায় কী? 

    Add Comment
    1 Answer(s)

      ত্বকের যে সমস্যাগুলো নিয়ে সবচাইতে বেশী বিব্রতকর সমস্যার সৃষ্টি হয়, সেগুলোর মাঝে অন্যতম মেছতা। মেছতা যে কারোরই হতে পারে। তবে সাধারণত নারীরাই বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা এবং যারা জন্ম নিয়ন্ত্রণ ওষুধ গ্রহণ করেন বা হরমোন থেরাপি নেন। হরেক রকম রূপচর্চা বা চিকিৎসা করেও মেছতা দূর করা কঠিন। কিন্তু আসলে এই মেছতা রোগটা কী? কিংবা কেন হয়? আর মেছতা প্রতিরোধ করতে কী কী করতে পারেন আপনি? আসুন, আজ জেনে নেয়া যাক বিস্তারিত।

      মেছতা কী ও কেন হয়?
      সূর্যরশ্মির প্রভাবে ত্বকে অতিরিক্ত মেলানিন উৎপন্ন হয়। এতে ত্বকের কিছু কিছু জায়গায় গাঢ় কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয় যা মেছতা বা মেলাজমা (melasma) নামে পরিচিত। গ্রীক শব্দ মেলাজ (melas) থেকে মেলাজমা শব্দের উৎপত্তি যার অর্থ কালো।

      ত্বকের যে সমস্ত জায়গায় সূর্যরশ্মি বেশি পড়ে সে সমস্ত জায়গা যেমন- উপরের গাল, নাক, ঠোঁট এবং কপালে মেছতা দেখা যায়। (সাধারণত ৩০-৪০ বছর বয়সের মধ্যে হয়)। তবে মাঝে মধ্যে ঘাড়ের পাশে, কাঁধ ও উপরের বাহুতে দেখা যায়। গায়ের রঙ ফর্সা যাদের তাদেরই মেছতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বগলে একধরনের মেছতা হয়। সেটি বংশগত এক রোগের কারণে। যার নাম নিউরোফিবরোম্যাটেসিস।

      সাধারণ মেছতা মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্যকে নষ্ট করে বটে। তবে শরীরের অভ্যন্তরে কোনো ক্ষতি করে না। কিন্তু কিছু মেছতা আছে যেগুলোকে স্কিন ক্যান্সার হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। যেমন লেনটিগো ম্যালিগনা, মেলানোসা ও ব্যাসাল সেল কারসিনোমা। তবে আর্লি স্টেজে এগুলো ধরা পড়ালে নিরাময় করা সম্ভব। রোদে বের হলেই সবার মেছতা হবে এমন কোনো কথা নেই। এখানে বংশগত প্রবণতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গবেষণায় দেখা গেছে জেনেটিক টেন্ডেন্সি ও সূর্যরশ্মির কম্বিনেশনে মেছতা তৈরি হয়। কিছু কিছু মানুষের দেহে সূর্যের আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি পড়ার সাথে সাথে উল্লেখযোগ্য হারে পিগমেন্ট সেল বা মেলানিন বেড়ে যায়, শুধু তাই নয় ত্বকের বাইরের স্তর হয়ে যায় আগের চেয়ে পুরু। যাদের গায়ের রঙ কালো তাদের সেভাবে মেছতা দেখা যায় না। কারণ কালো বর্ণের ত্বকে সূর্যরশ্মি বা আলট্রা ভায়োলেট রে সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারে না।

      মনে রাখবেন-
      মেছতা পুরোপুরি নির্মূল করার আসলে কোন উপায় নেই। আপনি যতই আধুনিক চিকিৎসা বা রূপচর্চা পদ্ধতি ব্যবহার করেন না কেন, যদি আপনার জিনে মেছতা হবার প্রবণতা থাকে তাহলে রোদে বের হলেই ফিরে আসবে মেছতা। তাই এক্ষেত্রে প্রতিরোধটাই বেশী জরুরী। মেছতা হবার আগেই নিন প্রয়জনীয় ব্যবস্থা।

      কী করবেন?
      -বাইরে বের হওয়ার আগে পর্যাপ্ত পরিমাণ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে এসপিএফের মাত্রা যেন ৩০ হয়।
      -বাইরে বের হওয়ার সময় স্কার্ফ, ওড়না বা আঁচল মাথায় জড়িয়ে নিন। সম্ভব হলে চওড়া ঘেরের টুপি পরুন।
      -ঘাড়-পিঠ ঢাকা, ফুলহাতা জামা পরুন।
      -ব্লিচিং ফেসিয়াল শতভাগ এড়িয়ে চলুন। এমন ফেসিয়াল ট্রিটমেন্ট নিন যার মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ অ্যাসিড, ঢাজোরাক ও ডিফেরিন জাতীয় উপাদানগুলো প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায়।
      -সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যবর্তী সময়ে রোদের মধ্যে কম বের হতে চেষ্টা করুন।
      -জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল গ্রহণ এবং হরমোন থেরাপি বন্ধ করতে হবে।
      -বাইরে বের হলে সবসময় ছায়ায় থাকুন। সম্ভব হলে সবসময় ছাতা ব্যবহার করুন।
      -রোদ থেকে বাঁচার জন্য শিশুদের সানস্ক্রিন ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

      এছাড়া দেখুন :

      মুখে কালো দাগ: মেছতা : এটি হচ্ছে মূলত আমাদের মুখের ত্বকের একটি রোগ। একে পিগমেন্টারি ডিজঅর্ডার বলি। মুখে যত ধরনের কালো দাগ পড়ে, তার মধ্যে মেছতা অন্যতম। মেছতার কারণের মধ্যে রয়েছে, যে মহিলারা গর্ভনিরোধক পিল খান, প্রেগন্যান্সি বা গর্ভাস্থায়ও তাদের মেছতা হতে পারে। আবার বাচ্চা হওয়ার পর, নিজে থেকে এটি চলে যায়। প্রেগন্যান্সি ছাড়াও মেছতা হতে পারে।

      Professor Answered on March 2, 2015.
      Add Comment
    • RELATED QUESTIONS

    • POPULAR QUESTIONS

    • LATEST QUESTIONS

    • Your Answer

      By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.