সেই ছেলেটা ছাড়া বাঁচার কথা ভাবলেই ভয় লাগে…
খুব ছোটবেলা থেকেই আমি নানান মানসিক কষ্টের মাঝে বড় হয়েছি। আমার বয়স ১৮ এবং আমি ইন্টার ২য় বর্ষে পড়ি। যখন আমি ক্লাস সেভেনে পড়ি তখন আমি এক হিন্দু ছেলের সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। সে ছেলে প্রথম রাজী হতনা। প্রায় ৮ মাস তার পেছনে ঘুরে তাকে রাজী করিয়েছি। তারপর অনেক ভালো ভাবেই যেতে লাগলো।
আমি যখন ক্লাস টেনে উঠলাম তখন আমাদের দেখা হয়। এত বছর আমি তার কাছ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখতাম কারণ আমি দেখতে খুব একটা সুন্দরী নই। তো আমাদের দেখা হওয়ার পর তার ভালোবাসা আমার প্রতি বহুগুনে বেড়ে যায়। দ্বাদশ শ্রেণীতে উঠার দুই মাস পর কোনভাবে আমাদের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক হয়ে যায় এবং সে আমার জন্য পাগল হয়ে যায়। আমার বাবা নেই, ভাই বোনও নেই। আমার মা আমাকে অনেক অপছন্দ করেন এবং অনেক ধরনের কষ্ট দেন। আমার সব সুখের মুলে সে রয়েছে।
কিন্তু কিছুদিন আগে আমার মা কে আমি তার ব্যাপারে সব বলি এবং তা জানার পর আমার মা বিভিন্নভাবে আমাকে ভয় দেখাচ্ছে, অভিশাপ দিচ্ছে। আমি এখন কী করবো? তাকে ছাড়া বাঁচা আমার পক্ষে সম্ভব না আর আমার মা আমাকে অপছন্দ করলেও তার বিমতে আমি কিছু করতে সাহস পাইনা। এখন আমি কী করবো? সেই ছেলেটা ছাড়া বাঁচার কথা ভাবলেই ভয় লাগে।
তোমার মা তোমাকে কেন অপছন্দ করেন, বিষয়টা পরিষ্কার না। তবে আমরা সন্তানেরা প্রায়ই মায়ের শাসনে খারাপ ভেবে নেই। বাবা নেই, ভাইবোন নেই, মা তোমাকে একলা মানুষ করেছেন। ব্যাপারটা যে কত কষ্ট ও হতাশার সেটা হয়তো তুমি বুঝতে পারছো না। একটু ভেবে দেখবে।
দ্বিতীয়ত, মাকে সম্পর্কের ব্যাপারে এখনোই বলে দেয়া ঠিক হয়নি। তুমি এখনো অনেক ছোট। একন সময় লেখাপড়া করে নিজের পায়ের দাঁড়ানোর। তাছাড়া ছেলেটি তো তোমাকে এখন বিয়ে করতে পারবে না। তাহলে এত তাড়াহুড়ার কী ছিল? তাছাড়া মাকে বলার আগে তোমার এটা নিশ্চিত হওয়া উচিত ছিল যে ছেলেটি আসলেই তোমাকে বিয়ে করতে পারবে কিনা। কেননা ভিন্ন ধর্মের মাঝে বিয়ে এমনিতেই আমাদের দেশে খুব কঠিন। তাঁর ওপরে আমি যতদূর জানি হিন্দু ধর্মে বিষয়টা আরও কঠিন। তাই ১০০ ভাগ নিশ্চিত না হয়ে মাকে বলা উচিত হয়নি।
তুমি আপাতত এইসব বিষয় মাথা থেকে বের করে দাও। মাকে জানিয়ে দেবে যে সম্পর্ক ভেঙে ফেলেছ। এতে মায়ের অস্বস্তি দূর হবে। তারপর তুমি ও ছেলেটি দুজনেই লেখাপড়ায় মন দাও, ক্যারিয়ার তৈরি করো। যদি প্রতিষ্ঠিত অয়া পর্যন্ত সম্পর্ক টিকে থাকে, তখন বিয়ে ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে ভাবা যাবে।