একজন মানুষের জীবনে সবচাইতে বড় অভাব কোনটি?
একজন মানুষের জীবনে সবচাইতে বড় অভাব কোনটি?
‘কোয়ে নো কাতাচি’ নামে একটি মাঙ্গার উপর ভিত্তি করে ২০১৬ সালে ‘এ সাইলেন্ট ভয়েস’ নামে একটি অ্যানিমে ছবি মুক্তি পায় যেটির প্রধান বিষয়বস্তু ছিল তর্জন ও কীভাবে তা মানুষের জীবন ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে ।
ছবির দুই মুখ্য চরিত্র ইশিদা (বাঁদিকে ) ও নিশিমিয়া ।
অ্যানিমে ছবি’র ভক্ত যারা তাঁদের হয়ত মনে আছে যে ওই বছরেই মাকোতো শিনকাইয়ের হাত ধরে ‘কিমি নো না ওয়া’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল যেটি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে, যার ফলে ‘এ সাইলেন্ট ভয়েস’ বোধ করি কতকটা ভাগ্যদোষেই ‘সাইলেন্ট’ই রয়ে গেছে ।
মজার ব্যাপার যেটা, এই ছবির ট্রেলার দেখে আমি স্থির থাকতে পারিনি, ছবি মুক্তি পাওয়ার আগেই যেন-তেন প্রকারণে মাঙ্গা জোগাড় করে পড়তে বসে গিয়েছিলাম; পড়েছি না বলে গোগ্রাসে গিলেছি বলাটাই ভালো । কেন? সেটা ঠিক বুঝিয়ে বলতে বোধয় পারব না; হয়ত ‘তর্জন’ আমার কাছে একটা স্পর্শকাতর বিষয় বলেই ।
মাঙ্গার একটা দৃশ্য আমার মনে এখনো গেঁথে আছে যেটার কথা এখানে লিখতে বসেছি— নিশিমিয়া—যে মাঙ্গার একটি অন্যতম প্রধান চরিত্র ও ছোটবয়সে স্কুলে তর্জনের শিকার হয়েছিল—একটি ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে নিচে লেকের জলে কোই মাছদের পাউরুটির টুকরো ছিড়ে-ছিড়ে খাওয়াচ্ছে । তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ইশিদা—যে ছোটবেলায় নিশিমিয়াকে তর্জন করেছিল—দৃশ্যটা দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করে নিশিমিয়াকে সে প্রতিদিনই এরকমভাবে কোই মাছদের পাউরুটি খাইয়ে দেয় কিনা ।
নিশিমিয়া জবাব দেয়, “হ্যাঁ, খাওয়াই । ওদের খাওয়ালে মনে হয় অন্তত কারও তো আমাকে প্রয়োজন আছে, হলই বা মাছ!”
জানিনা ইশিদা’র মনে কতটা প্রভাব ফেলেছিল এই কথাগুলো ( হয়ত যথেষ্টই প্রভাব ফেলেছিল, কারণ সে নিশিমিয়ার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতেই দেখা করতে আসে) কিন্তু আমার অন্তরটাকে মুচড়ে দিয়েছিল ।
এবার আসি প্রশ্নের উত্তরে— জানতে চাওয়া হয়েছে মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় অভাব কী? আমার মতে, উদ্দেশ্যের অভাবই আমাদের সবচেয়ে বড় অভাব ।
যে মানুষের জীবনে উদ্দেশ্য নেই, তাকে দুনিয়ার কোনো সুখই পরিপূর্ণতা দিতে পারে না । তাঁর সবকিছু থেকেও ‘কিছুই নেই’ ।
আর যদি উদ্দেশ্য থাকে, তবে মানুষ চরম দুঃখের মধ্যেও বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে নিতে পারে; হোক না সেটা কোই মাছদের খেতে দেওয়ার মত নগণ্যই একটা উদ্দেশ্য! তাই-ই সই ।
(ছবি গুগল ইমেজ সার্চ দ্বারা প্রাপ্ত)