ভালোবাসা কি যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়?
ভালোবাসা কি যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়?
একজন আলেম বসবাস করতেন মিসরে, কিন্তু জমি কিনেন মদীনায়। নির্দিষ্ট করে বললে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর হুজরার পাশে। অনেক দাম দিয়ে জমিটি কিনেন। তিনি মিসরের মন্ত্রী হন। অনেক ইবাদত করতেন।
একবার শুনলেন একজনের কাছে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর পবিত্র চুল মোবারক আছে। তিনি তার কাছ থেকে অনেক দাম দিয়ে তিনটি চুল কিনেন।
অন্যদিকে, তিনি মিসর থেকে মদীনার শাসকদের গিফট দিতেন। যেনতেন গিফট না, স্বর্ণ গিফট দিতেন। এমনকি মদীনার অধিবাসীদেরকেও দান করতেন।
মদীনার লোকজন অবাক হতো। এই লোক থাকেন মিসরে, জায়গা কিনলেন মদীনায়, আবার এতো দামি গিফট পাঠান। এগুলো কেনো করেন?
তাঁর জীবদ্দশায় উত্তর জানা যায়নি। তিনি যখন ইন্তেকাল করেন, তখন সবাই বুঝতে পারেন এসব তিনি কেনো করেন।
তাঁর স্বপ্ন ছিলো রাসূলুল্লাহ ﷺ এর পাশে যেন তাঁর কবর হয়। ইন্তেকালের আগে অসিয়ত করে যান। এই কারণেই নবীজির হুজরার পাশে তিনি জায়গা কিনেছিলেন।
মিসর থেকে তাঁর লাশ মদীনায় নিয়ে আসা হয়। লাশ নিয়ে আজ থেকে ১০০০ বছর আগে প্রায় ১০০০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দেয়া যেনতেন কথা না!
সেই মন্ত্রী-আলেমের ইচ্ছে পূরণের জন্য তাই করা হয়। তাঁর লাশ নিয়ে মদীনায় প্রবেশ করা হলে সবাই অভ্যর্থনা জানায়।
শুধু নবীজির রওজার পাশে দাফন করার জন্য তিনি অসিয়ত করেননি, তিনি আরো অসিয়ত করেন- নবীজি ﷺ –এর চুল মোবারকও যেন তাঁর কাফনে করে তাঁকে দাফন করা হয়।
সেই আলেমের নাম ইবনে হিনযাবা রাহিমাহুল্লাহ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যবহৃত জিনিসপত্র সাহাবীরা সংরক্ষণ করতেন।
উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূলের চুল মোবারক সংরক্ষণ করেন।
আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূলের জুব্বা মোবারক সংরক্ষণ করেন।
উম্মু সুলাইম রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূলের ঘাম মোবারক সংরক্ষণ করতেন।
মুআবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলের নখ সংরক্ষণ করেন।
আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের লাঠি সংরক্ষণ করেন। তাঁকে দাফন দেবার সময় এই লাঠিও দাফন করা হয়। এটা ছিলো তাঁর অসিয়ত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সাহাবীদের ভালোবাসাকে আপনি যুক্তির ফ্রেইমে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। ভালোবাসার প্রকাশ কি যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়?
রাসূলুল্লাহর সবকিছুই পবিত্র। তাঁর প্রতি ভালোবাসা সবকিছুর উর্ধ্বে।
শাইখ ড. মুহামাদ মূসা আশ-শরীফ, মহৎ প্রাণের সান্নিধ্যে: ৪/৩৩৬।