আপনি বড় হওয়ার সাথে সাথে কী কী লক্ষ্য করেছেন?
আপনি বড় হওয়ার সাথে সাথে কী কী লক্ষ্য করেছেন?
Add Comment
- ব্যক্তির ব্যবহার, আচার-বিচার, কথাবার্তা— তাঁর প্রকৃত পরিচয় বহন করে।শিক্ষাগত যোগ্যতা, সাজ-পোশাক, সামাজিক অবস্থান কারো সঠিক পরিচয় হতে পারেনা।
- মূর্খের সাথে তর্ক করে লাভ নেই। এতে শুধুই নিজের মানসিক শান্তি নষ্ট হয়।
- একজন মানুষকে তাঁর গুণ দিয়ে নয়, রূপ, বয়েস, সামাজিক অবস্থান দিয়ে বিচার করা হয়।অধিকাংশক্ষেত্রেই গুনীরা সমাজে যোগ্য স্থান পান না।
- যারা সবসময় বড় বড় কথা বলেন বা দেখনদারীতে ( show-off) অভ্যস্ত হন, তাঁরা বাস্তবজীবনে অন্তঃসার শূন্য ও ব্যক্তিগত জীবনে হতাশার শিকার হন। “খালি কলসীর আওয়াজ বেশি” — সর্বৈব সত্য।
- বক্তার থেকে শ্রোতার মূল্য বেশি। তাই কম কথা বলা এবং বেশি শোনার অভ্যাস করা উচিত।
- কাউকে সম্পুর্ন বিশ্বাস করে নিজের দুর্বলতা বা দুঃখ কষ্ট ভাগ করা উচিত নয়। একদিন না একদিন এই দুর্বল জায়গাতেই সেই বিশ্বাসের পাত্র চরম আঘাত করেন।প্রতিটা সম্পর্ক স্বার্থের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। কোনো সম্পর্কই স্বার্থহীন নয়।
- যতই চেষ্টা করা হোক না কেন, কাউকে সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট করা সম্ভব নয়।তাই নিজেকে সন্তুষ্ট করার দিকে বেশি যত্নশীল হওয়া দরকার।হাজারটা ভালো কাজের মধ্যে করা একটা ভুল কাজই শেষমেশ লক্ষ্যনীয় হয়ে ওঠে। এবং তা দিয়েই বাকিসব বিচার করা হয়।
- ঠিক সময়, ঠিক স্থানে, সঠিকভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হয়।পরমাহংসদেব ছোবল মারতে বারণ করেছেন, কিন্তু ফোঁস করতে বারণ করেন নি।
- অযাচিতভাবে অপরিচিত কেউ অত্যন্ত উপকারী বন্ধুর মত ব্যবহার করতে শুরু করলে, তা সহজভাবে নেওয়া উচিত নয়। এঁরা কখনোই বিশ্বাসের পাত্র হতে পারেন না।
- নিজের ভালোমন্দর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন এবং সর্বোপরি সমাজের কথা দূরে সরিয়ে রাখা দরকার।
- ভীতু, আত্মসুখী এবং স্বার্থপর মানুষ কখনো কারো বন্ধু বা আত্মীয় হতে পারে না।এঁদের থেকে দুরত্ব রাখাই মঙ্গল।
- জীবনে অর্থর গুরুত্ব অপরিসীম। অর্থহীন মানুষকে মানুষরূপেও গণ্য করা হয়না।
- জীবনকে সুন্দর করতে গেলে মনকে স্বচ্ছ ও পরিষ্কার রাখা খুব দরকার। কিন্তু চোখ কান নাক মুখ খোলা রেখে।সাপের সাথে সাপের মতই ব্যবহার করতে হয়।
- অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজের দিকে তাকানো দরকার। কেউ সম্পূর্ণরূপে নিখুঁত হতে পারেনা। দোষগুনেই মানুষ। যারা গুণ দেখতে পায়না, শুধুই দোষ খুঁজে বার করেন, তাঁদের সঙ্গ পরিত্যাগ করাই শ্রেয়।
- যারা প্রকৃত সুখী তাঁদের লোকসমাজে বা সামাজিক মাধ্যমে সুখের বিজ্ঞাপন দেওয়ার দরকার পড়ে না।
- “অতিলোভে তাঁতি নষ্ট”। যতটুকু আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট না থেকে আরও অনেক বেশী পাওয়ার আশায় দৌড়ালে শেষ পর্যন্ত দু’হাত খালিই থেকে যায়। বেশী তো পাওয়া যায়ই না, উল্টে যেটুকু ছিল তাও অনেকসময় হাতছাড়া হয়ে যায়।
- নারীদের নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। তাঁরাও যে পৃথিবীর বাসিন্দা এবং সর্বপরি ‘মানুষ’ — তা অনেকেই মনে রাখেন না।
- নারীর যৌন চাহিদা পুরুষের মতই স্বাভাবিক। কিন্তু যৌনাকাঙ্খার কথা পুরুষ খোলাখুলি আলোচনা করলে তা দোষের নয়। নারী করলেই তা পাপ।
- নিজের বাড়ির মেয়ে-বউ রোগা বা মোটা হলেই হয় শুঁটকিপারা নয় জলহস্তী, অর্থাৎ বিসদৃশ্য। পরের বাড়ীর মেয়ে-বউ রোগা বা মোটা হলে স্লিম নয় স্বাস্থ্যবতী -সুন্দরী , প্রশংসার যোগ্য।
- নিজের বাড়ির মেয়ের বেলায় — ” খবরদার হাতকাটা জামা কাপড় চলবে না, ছোট জামা প্যান্ট নৈব নৈব চ।এটা ভদ্রবাড়ির মেয়েরা পরে না।” বন্ধুর বাড়ির মেয়েরা পরলে ” বাহ বাহ! আধুনিকা।শিক্ষিতা।পোশাক কি করে পরতে হয় তা শেখা উচিত!!”
- পুরুষের বহুগামীতা গ্রহণযোগ্যই শুধু নয়, প্রশংসার যোগ্য।” আরে দারুন, মাচোম্যান।ক্ষমতা আছে মানতে হবে।” নারীর ক্ষেত্রে বহুগামীতা নিন্দনীয় শুধু নয়, দণ্ডনীয় অপরাধ। সুতরাং সেই নারী ” কুলটা, দুশ্চরিত্রা, পতিতা। সমাজে থাকার যোগ্য নয়।দুর করে দাও। “
- পরকীয়া সম্পর্কের ক্ষেত্রে — ” দোষ তো মেয়েটার। ছেলেরা তো এসব করবেই। মেয়েরা করে কি করে? স্বামী-সন্তান ত্যাগ করার কথা ভাবাও অন্যায়।” পুরুষ স্বছন্দে স্ত্রী-সন্তান ত্যাগ করার অধিকার রাখেন।
- নিজের বউ যৌনতার কথা মুখ ফুটে বললে —” ছি ছি ছি! অসভ্যতামো কোরোনা।মেয়েরা মুখে এইসব কথা বলে? একটুও শিক্ষা বা রুচি কিছু নেই নাকি?” পাশের বাড়ির বউদি খোলাখুলি যৌনতা নিয়ে আলোচনা করলে — ” উফফফ ! সত্যি! কি বোল্ড মাইরি।অসম্ভব স্মার্ট আর পরিণত। “
- নিজের বউ ছেলেবন্ধুর সাথে হাসিমজা করলেই— “সংসারে অশান্তির আসল কারণ তুমি তুমি তুমি।ছেলেদের নিয়ে মশগুল থাকো।” বন্ধুর স্ত্রী ছেলেবন্ধুদের সাথে হেসে গড়িয়ে গেলে — ” সত্যি কি সেন্স অফ হিউমার। কথা বলাটাও একটা আর্ট। এই জন্যই ছেলেরা সবাই ওঁর এতো ভক্ত।”
- এই সব কিছু মানে এতকিছু লক্ষ্য করার ফলস্বরূপ যা বুঝেছি তা হল — একা থাকার কোন বিকল্প নেই। একাকীত্ব আজকের যুগে অভিশাপ নয়, বরং আশীর্বাদ। তাই —