জীবন এতো কঠিন কেনো?
জীবনে কখনো শিশু পালন করেছেন? শিশুকে দশ মিনিট কোলে রাখতে ভালো লাগে। তবে, দশ ঘন্টা লালন পালন করলে, আসল মজা বোঝা যায়।
আপনার সবাই যমজ (twins) চেনেন। উপরের ছবিতে তেমনই – একসাথে চারটি শিশু জন্মেছে। এদেরকে quadruplets বলে। সম্ভবত এই কথাটির কোন বাংলা নেই।
এমন চারটি শিশু দেখতে খুব ভালো লাগে। তবে, লালন পালন করার সময় আসল মজা বোঝা যায়। একজনকে জামা পরানোর সময়, অন্য তিন জন হামাগুড়ি দিয়ে তিন দিকে চলে যায়। ওদের একজনকে ধরতে গেলে, জামা দিয়ে মাথা ঢাকা শিশুটি গড়িয়ে গড়িয়ে খাটের কোনায় চলে যায়। এভাবে এলোমেলো হয়ে যায়।
এসব শিশু আরেকটু বড় হয়ে যখন হাটতে শিখে, নিজের হাতে খেতে শিখে, তখন আরেক সমস্যা। চারজনকে চারটি প্লেটে একই খাবার দেবার পরে, নিজেরটা মাটিতে ফেলে পাশের জনেরটা কেড়ে নিতে চায়।
আরো বড় হয়ে স্কুলে গেলে, আরেক সমস্যা। নিজের পেন্সিল, কলম ইত্যাদি হারিয়ে অন্যের টা নিয়ে কাড়াকাড়ি করে। টিভিতে কোন কার্টুন চলবে, সেটার জন্য টিভির রিমোট নিয়ে মারামারি করে।
আরো বড় হলে, কে সবচেয় দামী মোবাইল নিবে, কে সবচেয়ে দামী বাইক নিবে, সেটা নিয়ে রেষারেষি করে।
ভেবেছেন, বড় হলে এসব সমস্যা সমাধান হয়? বিয়ের পরে তাদের কার বউয়ের গহনা ভালো, কার শাড়ি ভালো, এসব নিয়ে ঝামেলা চলে। এমনকি বুড়ো বয়সেও কে বেশি সম্পত্তি পেলো, সেটা নিয়ে ঝামেলা চলে।
জীবন মোটেই কঠিন নয়। মানুষ ইচ্ছা করে জীবনকে কঠিন করে। কখনো নিজের জন্য কঠিন করে, কখনো অন্যের জন্য কঠিন করে। সবকিছুই নিজের ইচ্ছায় করে। মানুষ ইচ্ছা করেই জীবনকে কঠিন করে।
ওই শিশুদের কথা চিন্তা করুন। সবার প্লেটে একই খাবার দেওয়া হয়েছে। এরপর, নিজের প্লেটের খাবার মাটিতে ফেলে, অন্যের প্লেট নিয়ে কাড়াকাড়ি করেছে। এভাবে ইচ্ছা করেই সবার জন্য সমস্যা তৈরি করেছে।
ছোট বড় সকল বয়সেই মানুষ একই ধরনের কাজ করে। অকারণে সবার জন্য সমস্যা তৈরি করে। আর এভাবেই জীবনকে কঠিন করে তোলে।